
একটু খেয়াল করে দেখুন পৃথিবীতে যে জিনিস গুলো সহজে পাওয়া যায়, মানুষের কাছে সেগুলোর মূল্য কম। একবার অনুভব করার চেষ্টা করুন তো ৫মিনিট অক্সিজেন ছাড়া থাকতে পারবেন কিনা। অক্সিজেন এতো দামী হওয়া সত্ত্বেও খুব কম মানুষই সেটার মূল্যয়ন করে। যখন সময় মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হয় তখন কিন্তু আমরা বৃষ্টির মূল্য বুঝতে পারি না। বৃষ্টির মূল্য আরো অনুধাবন করি যখন একদম কাঠ ফাটা রোদ, বৃষ্টির খুব দরকার কিন্তু বৃষ্টি হচ্ছে না। তখন কিন্তু আমরা প্রত্যেক ফোটা বৃষ্টির প্রয়োজন বুঝতে পারি। যখন বাজারে আলু বা টমেটো অনেক বেশি হয়ে যায় তখন কিন্তু তার দাম কমে যায়। এবার খেয়াল করে দেখুন যখন বাজারে এগুলো খুব কম পাওয়া যায় তখন এর ভ্যালু অনেক বেড়ে যায়।
যে মানুষটিকে চাইলেই পাওয়া যায়, একটু ডাকলেই ছুটে আসে, তার ভ্যালু কিন্তু অনেক কম। এবার আপনার জীবনের সাথে মিলিয়ে দেখুন আপনি যার কাছে অথবা যাদের কাছে নিজেকে অনেক অ্যাভেইলেবল রেখেছেন, যখনই ডাকা হয় তখনই আপনি হাজির। একটু ভেবে দেখেন, তাদের কাছে আপনার তেমন কোনো দামই নেই।
এবার অপজিট টা ভাবুন! পৃথিবীতে যত দামি জিনিস আছে মানে যে বিষয়গুলোকে আপনি অনেক বেশি মূল্যায়ন করেন, যে জিনিসগুলোকে আপনি অনেক বেশি দামি বলে অনুভব করেন সেগুলো কিন্তু এত এভেলেবল না। দেখবেন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান যখন তাদের সবচেয়ে দামি প্রোডাক্ট তৈরি করে সেটা কিন্তু খুব বেশি তৈরি করে না। এখানে তারা চাই এটি যেন মার্কে আনএভেইরেবল থাকে, কেউ চাইলেই কিন্তু এই প্রডাক্ট গুলো পাওয়া যায় না। তাই তার মূল্যও অনেক বেশি হয়।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম যখন বাড়ে তখন স্বাভাবিক এটা মার্কেটে কম পাওয়া যায়। এর কারণটাও কিন্তু সেই মার্কেটে অ্যাভেইলেবল না। আমরা মনে করি এটা বাজারে নাই, এটা আমার দরকার কিনতে হবে। তখন সেটির জন্য বেশি মূল্য খরচ করতে দ্বিধাবোধ করি না। আমরা মনে করি এটা বাজারের নাই এটা আমার দরকার কিনতে হবে পাচ্ছিনা এজন্য দাম বেশি। আপনি কোন সেমিনার বা ট্রেনিং এ এটেন্ড করবেন দেখলেন শুধু শেষের দু একটা সিট খালি আছে। আপনি এখনই টিকেট না কিনলে সিট পাচ্ছেন না, তখন কিন্তু আপনি কিনে ফেলবেন।
আমাদের শরীরের অর্গানগুলো যতক্ষণ পর্যন্ত ঠিকঠাক কাজ করে এগুলো যে কতটা মূল্যবান তা ফিল করতে পারিনা। যখনই কোন একটা অর্গান নষ্ট হওয়া শুরু করে তখন আমরা অস্থির হয়ে যায়, ছুটতে শুরু করি বিভিন্ন ডক্টরের কাছে বা হসপিটালে। কারণ তখন আমরা বুঝতে পারি আমাদের এই অর্গানগুলোর লিমিটেড।
নিজেকে অন্যের কাছে এভেইলেবল না করে লিমিটেড করেন দেখবেন অন্যরা আপনাকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করবে। আমি এটা বলছি না যে আপনজনদের সময় দিবেন না বা আপনজনদের কাছে এভেইলেবল থাকবে না। অবশ্যই আপনজনদের সময় দিবেন, তাদের সময় দেওয়া উচিত। আমি শুধু এইটুকু বলছি যারা আপনাকে তাদের কাজে ব্যবহার করছে, এমনকি বারংবার আপনাকে ব্যবহার করছে। আর আপনি বারংবারই নিজেকে এভেইলেবল রাখছেন। এভাবে একটু একটু করে আপনার আপনার মূল্য কমে যাচ্ছে। এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসুন।

নিজেকে মূল্যবান করে গড়ে তুলুন। ভাবতে শিখুন পৃথিবীতে আপনিও একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব (খেয়াল রাখবে এটা করতে যেয়ে যেন অহংকারী না হয়ে যান)। আপনি আপনার মত আর একজন মানুষ পারলে দেখান তো! পারবেন না কারণ আপনি একাই কিন্তু এরকম এবং আপনিও একজন ব্রিলিয়ান্ট ব্যক্তি। মনে রাখবেন এই পৃথিবীতে- You are very expensive creation. তাই আগে নিজে নিজেকে মূল্যায়ন করতে শিখুনে তাহলে অন্যরাও মূল্যায়ন করবে।
জীবন ঘনিষ্ট আরও আর্টিকেল এখানে