পরিবার
চার অক্ষরের এই শব্দটি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্কের অর্থ বহন করে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমরা অনেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে কেউ কখনোই শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। কারণ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিশে আছে আমাদের অন্তরঙ্গতা, ভালোবাসা, আবেগ ইত্যাদি ইত্যাদি। একটি প্রশ্ন উঠেছে এই বিষয় নিয়ে যে, কিভাবে আমরা আমাদের পরিবার কে খুশি রাখতে পারি? আজকের এই আর্টিকেলে পরিবারকে সুখী রাখার জন্য উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপায় তুলে ধরা হলো।
মৌলিক চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া
প্রথমত আমি বলবো একটা পরিবার কে খুশি রাখতে হলে প্রথমেই তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে জানতে বা মেটানোর চেষ্টা করতে হবে। তার মধ্যে খাদ্য, পোষাক, বাসস্থান এই তিনটি বিষয় নিশ্চিত করা গেলে বাকি চাহিদা গুলোর জন্য চেষ্টা করাটাই যৌক্তিক বলে মনে করি। তবে পরিবারের কর্তাই যে সবকিছু মিলিয়ে দেবে বা তিনি ছাড়া আর কেউ সহযোগীতা প্রদান করবে না এরকমটা হওয়া ঠিক নয়, যদি সে একা সব কিছুর জন্য যথেষ্ট না হয়ে থাকেন।
পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা
যদি আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এর যোগান থেকে থাকে তাহলে, অবশ্যই আপনার উচিত সেগুলোর হিসাব মতো খরচ করা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সেই বিষয়ে আলোচনা করা যে, কিভাবে পরিবারের সুখ শান্তি এভাবেই বজায় রাখা যায়। এক্ষেত্রে পরিবারের সকল সদস্যদের মতামত নেওয়া এবং প্রতিটি মতামত এর প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা।
সন্তানদের সাথে সময় কাটানো
সন্তান সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত এক ধরনের আমানত যা আবার তাকেই ফিরিয়ে দিতে হবে। যেহেতু সন্তানদের নিয়েই আমাদের পরিবারের সব হৈ হুল্লোড় সুখের আবেশ সেহেতু সন্তানদের সাথে অবশ্যই কোয়ালিটি সময় দেওয়া, তাদের কথা শোনা ও তাদের মতামতের গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের হৃদয় কে বুঝতে পারা এবং তাদেরকে তাদের মতো করে সভ্যতার শিক্ষা গ্রহন করানো ইত্যাদি ইত্যাদি।
পার্টনারের সাথে মন খুলে কথা বলা
সুখ দুঃখের কথা আসলে দাম্পত্য জীবনের কথা আসবেই। যেহেতু এই বিষয়টা একটু গুরুত্বপূর্ণ এবং গম্ভীর বিষয় সেক্ষেত্রে আমাদের দাম্পত্য জীবনে সুখী হবার জন্য সামাজিক অপরাধ গুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখবো। শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করবো, নিজের পার্টনারের সাথে মন খুলে কথা বলবো এবং একে অপরের সাথে যথাসম্ভব সম্মান প্রদর্শন ও সমন্বয় করে পরিবার পরিজন নিয়ে সময় পার করবো।
অর্থ-সম্পদ নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির সুযোগ না দেওয়া
অর্থ/ টাকা/ধন-সম্পদ এগুলো আমাদের মানুষিক শান্তির কারণ হলেও এগুলো আমাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হবারও কারণ বটে! তাই দান করুন এবং সম্পদকে কালো সম্পদে পরিণত করবেন না এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে আপনার সম্পদ নিয়ে এমন কোন আলোচনা করবেন না যাতে করে পরিবারের অন্য সদস্যদের ভিতরে আপনার সম্পদের লোভ জন্ম নেয় বা সম্পর্কের ফাটল সৃষ্টি করে।
ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠা
ধার্মিকতা ও সামাজিকতা এই দুইটা জিনিস আমাদের আজকের সমাজের মানুষ গুলোর জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করবেন পরিবারে ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে এবং পরিবারের সদস্যদের দ্বারা যাতে সমাজের অন্য একটি মানুষ কষ্ট না পায় সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে নিশ্চিত থাকার চেষ্টা করবেন।
পরিশেষে ছোট্ট এই কথাগুলোর কিছুটাও যদি বাস্তবায়ন করতে পারেন তাহলে আশা করছি আপনার পরিবার হবে একটি সুখী পরিবার একই সাথে সমাজের অন্য পরিবার গুলো থেকে ভিন্ন এবং অন্যতম সুখী পরিবার।
পারিবারিক সমস্যার সমাধান নিয়ে সকল আর্টিকেল এখানে দেখুন