কিভাবে ভালো স্ত্রী হওয়া যায়?
প্রত্যেক ছেলের স্বপ্ন এমন একজন স্ত্রী খুঁজে পাওয়া যে তাকে তার জান পরান দিয়ে ভালোবাসবে। যে খারাপ সময়ে পাশে থেকে সমর্থন ও সাহস যোগাবে। জীবনসঙ্গী যেমন সুখের সঙ্গী তেমনই দুঃখেরও সঙ্গী হবে, ভাগাভাগি করে নেবে জীবনের সুখ-দুঃখ। বিপদের সময় ভরসার সবচেয়ে শক্ত হাতটি স্ত্রীরই হতে হবে। একজন ভালো স্ত্রী হতে হলে যে সকল বিষয় মেনে চলা প্রয়োজন তা এই আর্টিকেলে সহজ ভাষায় আলোচনা করার চেষ্টা করবো। কিছু উল্লেখযোগ্য পরামর্শ নিম্নলিখিত হতে পারে:
হাস্যোজ্জ্বল থাকুন
গোমড়া মুখে না থেকে সব সময় চেহারার মধ্যে হাস্যোজ্জ্বল ভাব আনুন যেন আপনাকে দেখে স্বামীর নেগেটিভ ধ্যান না আসে। স্বামীর অর্থকড়ি কম থাকলেও তাতেই সন্তুষ্ট থাকুন ও ধৈর্য ধারণ করুন। অন্যদিকে স্বামী সম্পদশালী হলে মহান আল্লাহর কাছে দুজনে মিলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
সত্য বলুন
শুধুমাত্র সত্য কথা বলার মাধ্যমে একজন নারী তার গোটা জীবনকে সুশোভিত করে তুলতে পারে। মনে রাখবেন ভালো-খারাপ সকল স্বামীই চাই তার স্ত্রী সব সময় সত্য কথা বলুক। সত্য বলাতে অনেক সময় সাময়িক অসুবিধা হলেও বা দু-একটা কটু কথা শুনতে হলেও সত্য বলার অভ্যাস তৈরি করুন। শুধু সত্য বলতে হবে দেখেই দেখবেন জীবন থেকে অনেক অন্যায় কাজ দূরে ঠেলে দিচ্ছিন। একই ভুল বারবার করবেন না বরং কোন ভুল হলে সেটি দ্বিতীয় বার সংঘটিত হওয়ার সুযোগ দিবেন না।
স্বামীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন
প্রেম এবং সম্মান স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। স্বামী যেমনই হোক না কেন আপনি তার স্ত্রী, তাই স্ত্রীর অবস্থান থেকে স্বামীকে যথেষ্ট সম্মান করতে হবে যেন স্বামী বুঝতে পারেন আপনি তাকে সম্মান করেন। এতে আপনার প্রতি আপনার স্বামীর সম্মান ও মায়া-মহব্বত অনেক বেড়ে যাবে।
স্বামীর প্রতি যত্নবান
শুধু নিজেরটা বুঝলেই হবে না। স্বামীর প্রতিও অধিক যত্নবান হতে হবে। সাধারণত স্বামীগণ অনেক বেশি কর্মব্যস্ত থাকে তাই তাদের খাওয়া-দাওয়া, শরীর ঠিক আছে কিনা, মানষিক অবস্থা ভালো করার জন্য অদিক যত্নবান হোন।
স্বামীকে উৎসাহ দেন
স্বামীর কাজে একজন ভালো স্ত্রী সবসময় উৎসাহ জোগাবেন। এতে স্বামীর মনোবল বৃদ্বির পাশাপাশি স্ত্রীর সাথে সবকিছু শেয়ার করার প্রবণতা বাড়ে ফলে সংসারে শান্তি আসে।
স্বামীকে কিছু সময় একা থাকার সুযোগ দেন
বিয়ে মানেই স্ত্রী স্বামীর কাছে বন্দি নয়। তাই স্বামী চাওয়া বা ইচ্ছাপূরণের সুযোগ দিতে হবে। স্বামীর সবকিছুতে নাক গলাবেন না এমনকি সবকিছুতে নিজের সিদ্ধান্ত জানান দিতে যাবেন না। কারণ স্বামীরও নিজের জন্য কিছু প্রয়োজন কিংবা সময় লাগে।
দ্রুত সমঝোতা করুন
মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয় তাই কখনো কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা যদি ঘটেই যায় তাহলে অতি দ্রুত স্বামীর সাথে সমঝতা করে ফেলুন। কার দোষ সেটা দেখা নয় আগে সমঝতা করার জন্য আপনিই এগিয়ে যান। এক্ষেত্রে কোন প্রকার ইগো রাখা চলবে না। মনে রাখবেন যেন ঝামেলা কোন অবস্থাতেই সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী না হয়ে যায়।
অপরাধ বোধ প্রকাশ করুন
নিজের অজান্তে কোন মিসটেক হয়ে গেলে আপনার মধ্যে যেন অপরাধবোধ জন্মায় এবং সেটি যেন স্বামী বুঝতে পারে আপনি অনুশোচনা করছেন। ভুল স্বীকার কিন্তু দোষের কিছু না বরং যে ভুল স্বীকার করলো সে যেন নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করলো।
সঞ্চয়ী মনোভাব তৈরি করুন
খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে সঞ্চয় করতে পারা মানে নিজের সংসারটা কে গুছিয়ে নেওয়া। সঞ্চয়ী এবং কৃপণতা একসাথে গুলিয়ে ফেলবেন না। কারণ অনেকেই সঞ্চয় করাকে কৃপণতার লক্ষণ মনে করেন। আপনার ছোট ছোট সঞ্চয়গুলো এক সময় জায়গা করে দেখবেন বড় হয়ে গেছে। এই মনোভাব ও তা বাস্তবায়ন করতে পারলে কিন্তু ঘরের লক্ষী বৌ তকমা টা পেয়ে যেতে পারেন।
গিফট করার চেষ্টা করুন
আপনার সাধ্যের মধ্যে সামান্য কিছু হলেও মাঝে মাঝে স্বামীকে গিফট করুন। বিভিন্ন অকেশন অনুযায়ী গিফট করতে পারেন। উপহারের জন্য বই ভালো বিকল্প হতে পারে।
অর্থনৈতিক সহায়তার চেষ্টা করুন
স্বামীকে আপনার সাধ্যর মধ্যে যতোটুকু সম্ভব মাঝে মাঝে আর্থিক সহায়তা করার চেষ্টা করবেন এতে স্বামী খুশি হয়। আদর্শ স্বামী কখনো আপানার সাধ্যের বাইরের কিছু আশা করেন না।
জ্ঞান অর্জন করতে থাকুন
কাজ করা, শিক্ষা এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করুন। যুগের বা পারিপাশ্বিক চাহিদা মোতাবেক শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এতে স্বামী ও পরিবারের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
One Comment