Great News! এডমিশন ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুব দরকারী অ্যাপ Admission Assistant
Health

আপেল সিডার ভিনেগার কি ও কেন খাবেন

স্বাস্থ্যবান লাইফস্টাইল মেইনটেইন করে থাকলে আপেল সিডার ভিনেগারের উপকারিতার কথা কম বেশি জানার কথা শরীর চাঙ্গা রাখা ও ত্বকের পরিচর্যায় Apple Cider Vinegar অনেক বেশি কার্যকর। কথায় আছে- নিয়মিত একটি করে আপেল খেলে ডাক্তার থেকে দূরে থাকা যায়। তেমনই কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া শুরু করলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা অনেকগুণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ৩১ শতাংশ কমে যায়।

ভিনেগার কি

ফল পঁচিয়ে তা থেকে সুরাসার বা এ্যালকোহল, এরপর এ্যালকোহল থেকে ভিনেগার বা শির্কা প্রস্তুত করা হয়। যেসকল ফলে চিনি বা সুগারের পরিমান বেশী থাকে সেই ফলগুলো ভিনেগার তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়। আঙ্গুর, আপেল, পিয়ার্স, ভুট্টা, খেজুর, মধু আজকাল চাউল থেকেও ভিনেগার তৈরী করা হচ্ছে।

আপেল সিডার ভিনেগার কি?

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পুরোপুরিভাবে প্রাকৃতিক পণ্য, যা তৈরি করা হয় আপেল দিয়ে। আপেল থেকে ভিনেগার বানানোর জন্য এটিকে দু’বার প্রোসেসিং করতে হয়।

আপেল সিডার ভিনেগার কি হালাল?

ভিনেগারকে বাংলায় বলে শির্কা আর আরবীতে বলে খল। হাদিসে এসেছে, যা বেশি পরিমাণ খেলে বা পান করলে মাতলামি হয় তা কম পরিমাণ খাওয়াও হারাম। (ইবনে মাজাহ)

এবার মাসয়ালায়ে আসুনঃ যা বেশি পরিমাণে উন্মত্ততা সৃষ্টি করে না তার বেশি বা কম পরিমাণে গ্রহণ করা বৈধ যদিও তাতে সামান্য পরিমাণ এ্যালকোহোল মিশানো হয়। এ্যালকোহোলের পরিমান ০.১ % থেকে ০.৫% পর্যন্ত থাকে তাহলে তা খাওয়া হারাম হবে না! ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যদি মিশ্রনের পরিমান এত নগন্য হয় যে তা দিয়ে প্রস্তুতকৃত খাদ্য দ্রবের গুন ও প্রকার বদলে না যায় তা হলে তা গ্রহন যোগ্য হবে।

আপেল সিডার ভিনেগারে কোন এসিড থাকেঃ এই ভিনেগারে ৫% থেকে ৬% অ্যাসেটিক এসিড থাকে যা মানব দেহের জন্য উপকারি। এছাড়াও আপেল সিডার ভিনেগারে রয়েছে এন্টি-অক্সিডেন্ট ও খনিজ লবণ। এটাও মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর না।

আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা

আপেল সিডার ভিনেগার মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রাচীন গ্রিক সভ্যতাতেও এটির বর্ণনা পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ক্ষতস্থান দ্রুত শুকানোর জন্য এটি ব্যবহার করা হতো। খাবার থেকে রূপচর্চা, রূপচর্চা থেকে চুল, চুল থেকে ওজন কমানো, ওজন কমানো থেকে শরীরে উদ্যম পাওয়া সব কিছু পাবেন সব গুণ সম্পন্ন আপেল সিডার ভিনেগারে। এমনকি এটা দিয়ে আপনি তুলতে পারবেন বাসন পত্রে, বাথরুমে লেগে থাকা কঠিন দাগও।

এটির উপকারিতা সম্পর্কে আরও কিছু জেনে নেওয়া যাক-

banner
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ বড় ভূমিকা পালন করে
  • হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে
  • হৃৎপিন্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে
  • হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • ঠান্ডা ও সর্দি-কাশি সারাতে ব্যবহার করা হয়
  • ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মারতে সাহায্য করে
  • চুলের খুশকি দূর করে
  • মুখের দুর্গন্ধ তাড়াতে সাহায্য করে
  • রান্নার আগে খাবার মেরিনেট করতে দরকার পড়ে
  • কেক কিংবা বিস্কুট তৈরিতে এর ব্যবহার করা হয়
  • খাবারে লবণ হলে এটি লবণাক্ততা কমাতে সাহায্য করে
  • ড্রিংকসের স্বাদ বা ফ্লেবার পাল্টায়
  • যাদের দাঁত হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে তারা এটি ব্যবহার করে দেখুন

আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম

Apple Cider Vinegar কখনও কাঁচা বা সরাসরি খাবেন না। আপেল সিডার ভিনেগার কেন খাবেন সেটির উপর ভিত্তি করে খাওয়ার নিয়ম পরিবর্তিত হয়ে থাকে। অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন আর সেটি হলো আপেল সিডার ভিনেগার খেলে কি ওজন কমে? আসলেই এটি খেলে ওজন কমে। ওজন কমানোর জন্য সকালে উঠে খালি পেটে Apple Cider Vinegar খেতে হবে। মনে রাখেবেন খাওয়ার অন্তত ২০ মিনিট আগে ভিনেগার খেতে হবে । এভাবে খেলে হজমের দিক থেকেও বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।

ভিনেগার কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়

খাবার থেকে রূপচর্চা, রূপচর্চা থেকে চুল, চুল থেকে ওজন কমানো, ওজন কমানো থেকে শরীরে উদ্যম পাওয়া। সব কিছু পাবেন সব গুণ সম্পন্ন আপেল সাইডার ভিনেগারে। এমনকি এটা দিয়ে আপনি তুলতে পারবেন বাসন পত্রে, বাথরুমে লেগে থাকা কঠিন দাগও। ভিনেগার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় বিভিন্ন খিাবার রেসিপিতে।

আপেল সাইডার ভিনেগার কেনার আগে জেনে রাখুন

আপেল সিডার ভিনেগার কেনার আগে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

রংঃ আপেলের খোসার রঙের উপর ভিনেগারের রঙ নির্ভর করে এই ভিনেগারের রঙ হলুদ থেকে কমলা হতে পারে। যদি আপেলের রং ফ্যাকাশে গোলাপী হয় তাহলে ভিনেগারের রং হলুদাভ হবে আর যদি আপেলের রং গাড় লাল আপেল থেকে তৈরি করা হয় তাহলে গাড় রঙের ভিনেগার পাওয়া যাবে। আবার কিছু ব্র্যান্ড বর্ণহীন বা সাদা রঙের আপেল সাইডার ভিনেগার বিক্রি করে থাকে তবে এটি নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে।

এসিডিটিঃ কেনার পূর্বে বোতলের লেবেলটিতে থাকা এসিডিটির পরিমাণ কতটুকু পড়ে নিন। সবচেয়ে ভালো কাজ করে ৫% এসিডিটির ভিনেগার।

প্রকারভেদঃ বাজারে অপাস্তুরিত, কোল্ড কমপ্রেসড, অপরিশুদ্ধ ও ফ্লেভারড জাতীয় আপেল সিডার ভিনেগার পাওয়া যায়।

  • অপাস্তুরিত আপেল সাইডার ভিনেগারঃ নাম শুননেই বুঝা যায় এটি পাস্তুরিত করা ভিনেগার না। অর্থাৎ এতে ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীব লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা থাকে।
  • কোল্ড কমপ্রেসড ভিনেগারঃ এটি ঠান্ডা আপেলের জুস দিয়ে তৈরি করা হয়। যার কারণে আপেলের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়না। অন্যান্য জুসের চেয়ে এটি বেশ স্বাস্থ্যকর।
  • আনফিল্টারড আপেল সাইডার ভিনেগারঃ আপেল সাইডার ভিনেগারের আসল রূপ পেতে হলে আপনাকে প্রাকৃতিক গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা ভিনেগার খুঁজে নিতে হবে। কারণ আনফিল্টারড আপেল সাইডার ভিনেগার কেনাটাই সবচেয়ে উপকারি। এটি গাড় বর্ণের হয়। তাছাড়া সবার মতে এটি অনেক শক্তিশালী।

কেনার পূর্বে ভালো করে এর লেবেলটি পড়ে নিন। আপেল সাইডার ভিনেগার পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হয় বা ত্বকে প্রয়োগ করতে হয়, নাহলে এটি ত্বক ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।

আপেল সিডার ভিনেগার কোথায় পাবেন?

এটি এখন মোটামুটি সকল সুপার স্টোর যেমন মিনা বাজার, স্বপ্ন, দারাজ ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।

কাদের আপেল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করা উচিত?

যাদের রক্তে কোলেস্টেরল আছে যারা অধিক ওজনের বা শরীরে মেদ জমেছে তারা আপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারবেন। কারণ আপেল সিডার ভিনেগার রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে রাখতে ও শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আপেল সিডার ভিনেগারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  • দাঁতের এনামেলকে নষ্ট করে থাকে।
  • অসাবধান হলে গলা ও ত্বকের ক্ষতি করবে।
  • পাকস্থলির পিড়া হতে পারে। তবে নিয়মিত খাওয়ায় সমস্যা দূর হয়।
  • হাড়ের ঘনত্ব কমায়।
  • হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • বুকজ্বলা ও গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুন স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button